home . about . others . শিক্ষনীয় গল্প
দয়া করে সবাই পরবেন জয় হরিবল
17-05-20 (05:21)
কোন_শাস্ত্রে_আছে??# #মাছ মাংস খেতে নেই কেন? কোন শাস্ত্রে আছে? প্রমাণ চান? *মাছ মাংস খেয়ে কি হরিনাম করা যায় না? ভগবানকে পাওয়া যায় না? কোন্ শাস্ত্র বলেছে,মাছ মাংস খেয়ে হরিনাম করা যায় না? শাস্ত্রের প্রমাণের পূর্বে কিছু আলোচনা করা যাক! প্রথমত বলি মাছ মাংস আসলে কাদের খাদ্য? জীব হিংসা বা হত্যা মানেই পাপ!তাহলে কাদের ক্ষেত্রে এই আইন?? যাদের উন্নত চেতনা দিয়েছেন ভগবান অর্থাৎ জীবশ্রেষ্ঠ মানুষ।একটা সাপ,ব্যাঙ,মাছকে ধরে হত্যা করে খেয়ে জীবন ধারণ করবে, আবার সাপকে ময়ূর ধরে হত্যা করে খাবে,ময়ুরকে হিংস্র পশুরা ধরে হত্যা করে খাবে। এটাই খাদ্যশৃঙ্খল।একটা জীব আর একটা জীবকে খেয়ে জীবন ধারণ করবে,এটা শাস্ত্র অনুমোদিত। তাই এইসব প্রাণীদের অন্য প্রাণী হত্যা করে খেলেও পাপ পূণ্যের কোনও বিচার করা হয়না।কারণ তাদের চেতনা মনুষ্য অপেক্ষা অনেক নিম্নমানের। বর্তমানে কলিযুগ চলছে! আজ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে যখন পৃথিবীতে দ্বাপরযুগ শেষ হয়ে,কলি মহারাজ প্রবেশ করছিলেন, তখন এই পৃথিবীর শাসনকর্তা শ্রীঅর্জুনের প্রোপৌত্র পরীক্ষিত মহারাজ কলিকে প্রথম আশ্রয় প্রদান করেছিলেন জীবহিংসুক ব্যক্তিগণের মধ্যে,অর্থাৎ যারা নীরিহ প্রাণীদের হত্যা করে খাদ্য হিসাবে জীবন ধারণ করবে, তাদের মধ্যে কলি সর্বদাই বিরাজমান থেকে নানাবিধ পাপকর্মে লিপ্ত করাবেন। এইবার কিছু শাস্ত্রীয় প্রমাণ দেওয়ার প্রয়াস করছি।পরে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে। মনুসংহিতা_ শাস্ত্রে পঞ্চম অধ্যায়ে ৫৫ নং শ্লোকে বলা হয়েছে "মাংস ভক্ষয়িতামুত্র যস্য মাংসামিহাদ্ম্যহম্। এতন্মাংসস্য মাংসত্বং প্রবদন্তি মনীষিণঃ॥ *মনিষীগণের দ্বারা _'মাংস' কথাটির অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে- _'মাম্' স খাদতি ইতি মাংস'_ অর্থাৎ, _"সেও আমাকে খাবে যেরূপ আমি তাকে খাচ্ছি। অর্থাৎ _"ইহলোকে আমি যার মাংস ভক্ষণ করছি পরলোকে আমাকেও সে ভক্ষণ করবে। অনেকে পূজাতে পশুবলি দিয়ে মাংস খায় আবার মুসলিম সম্প্রদায়ে বিভিন্ন নীরিহ পশু পাখিকে বিসমিল্লা বলে নৃশংসভাবে টুঁটি বা গলা কেটে মাংস খাওয়ার জঘন্য প্রথা আছে। আসলে এগুলো নারকীয় ইন্দ্রিয় তৃপ্তি বলা হয়।এদের জন্য শাস্ত্র কি বলছে বলি দিয়ে মাংস খাওয়া ধর্মানুমোদিত মনে করে যদি কেউ মাংসাশী হয় তবে সে স্বধর্মকেই ত্যাগ করে বিধর্মকেই স্বধর্ম মনে করে।" (ভাগবত ১১.৫.১৩) বিবৃতি) "আর যে সব দাম্ভিক ব্যক্তি ইহলোকে দম্ভ প্রকাশ করার জন্য যজ্ঞের অনুষ্ঠান করে এবং সেই যজ্ঞে পশু বধ করে,পরলোকে তারা 'বৈশস' নামক নরকে নিক্ষিপ্ত হয়। যমদূতগণ তাদের অশেষ যাতনা দিয়ে বধ করে।" (ভাগবত১১.৫.২৫) কিন্তু তাদের যাতনা শরীরের মৃত্যু হয়না। শুধু অসীম তীব্র যন্ত্রণা ভোগ করতেই থাকে।(যারা নরকের অস্তিত্ব বিশ্বাস করেনা তারা নরকে গিয়েই তবে বিশ্বাস করবে।) ছাগল-মহিষ-আদি বলি দিয়া পূজে॥ বৈশস-নরকে যাথে বধস্থান বলি। নরক ভুঞ্জায়ে তারে তথা লইয়া ফেলি।। ছাগ-মহিষের রূপ ধরি ভয়ঙ্কর। খন্ড খণ্ড করি তার কাটে কলেবর॥ আর্তনাদ করি কান্দে হইয়া ফাপর। মহাশুলে তার অঙ্গ বিন্ধে নিরন্তর॥ (শ্রীকৃষ্ণ প্রেম তরঙ্গিনী ৫.৮ ৪১-৪৪) শ্রীমদ্ভাগবত (৫.২৬.৩১) শ্লোকে বলা হয়েছে _"যারা পশুবলি দিয়ে ভৈরব বা ভদ্রকালী প্রভৃতি দেবদেবীর পূজা করে,হিংসা-কবলিত সেই পশু যমালয়ে রাক্ষস হয়ে ঘাতকের মতো সুতীক্ষ্ণ অস্ত্র দিয়ে তাদের বধ করে। ইহলোকে যারা পশুর রক্ত পান করে আনন্দে নৃত্যগীত করে সেইসব হিংস্রাশ্রিত পশু সেইরূপেই পরলোকে হিংসাকারীর রক্ত পান করে আনন্দে নৃত্যগীত করতে থাকে।" মাছ-মাংস হচ্ছে উগ্র রাজসিক ও ঘোর তামসিক খাদ্য,যা মানব মনের পশুবৃত্তি বাড়িয়ে তোলে,ধীরতা ও পবিত্রতা নষ্ট করে। উদ্ভিজ্জ খাদ্য সাধারণত দেহ ও মনে সত্ত্বগুণের সঞ্চার করে।* রক্ত-মাংস-হাড়-কাঁটা দিয়ে তৈরি খাদ্য হল ঘোর তমসান্ধ ব্যক্তির খাদ্য। তাই মাছ-মাংস অমেধ্য অর্থাৎ,অস্পৃশ্য খাদ্যরূপে চিহ্নিত। শ্রীমদভগবদ্ গীতায় (১৭.১০) ভগবান নির্দেশ দিয়েছেন এই অস্পৃশ্য খাদ্য তামসিক ব্যক্তিদের প্রিয়। _"চামেধ্যং ভোজনং তামসপ্রিয়ম।" পিশাচ,রাক্ষস,ডাইনী ইত্যাদি ধরনের জাতি কিম্বা হিংস্র প্রাণীরাই রক্ত, মাংস,হাড়, কাঁটা ভোগ করতে চায়। কিন্তু সভ্যতাগর্বী মানুষগুলি কেন পিশাচ-রাক্ষস ধর্ম গ্রহণ করবে? শ্রীমদ্ভাগবতে (৪/১৮/২১) বলা হয়েছে-- _"যক্ষ,রাক্ষস,ভূত ও পিশাচেরাই মাংস আহারে অভ্যস্ত হয়।"_ সত্যিকারের মানুষ এগুলো ভক্ষণ করেনা। অনেকে বলেন যে,আমরা অন্যান্য পোকামাকড়,সাপব্য াঙ,পশুপাখি খাইনা। কেবল মাছটা খাই! এতে দোষ কোথায় কিন্তু মানবজাতির পিতা মহর্ষি মনু মনুসংহিতা শাস্ত্রে সবার প্রথমেই মাছ ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন "যো যস্য মাংসমশ্নাতি স তন্মাংসাদ উচ্যতে।" মৎস্যাদঃ সর্বমাংসাদস্তস্মান্মৎসান্ বিবর্জয়েৎ॥ (মনুসংহিতা ৫ /১৫) অর্থাৎ"যে যার মাংস খায়,সেই ব্যক্তি তন্মাংসখাদক(সেই প্রাণীর মাংস খাদক) বলে কথিত। কিন্তু মাছ সমস্ত প্রাণীর মাংস খায়।সব রকমের মরা প্রাণীর পচা দেহ মলমূত্রাদি খেতে অভ্যস্ত। সুতরাং একটি মাছ খাওয়া যা, আর সব রকমের প্রাণীর মাংস খাওয়াও তাই। তাই মাছ খাওয়া সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য। শ্রীমদ্ভাগবতে (১১/৫/১৪) বলা হয়েছে, "ধর্মতত্ত্বে অনভিজ্ঞ,দুর্বিনীত, সাধুত্ব- অভিমানী,দুর্জন অসাধু ব্যক্তিরাই নিঃশঙ্কচিত্তে পশুহিংসা করে থাকে।" অতএব নরদেহ লাভ করে যারা বুদ্ধি বিপর্যয়ক্রমে মাংস খাচ্ছে,তাদের অনুরূপভাবে ঋণচক্র পরিশোধ করতেই হবে। হ্যাঁ এটাই বাস্তব সত্য কথা। যারা মাছ-মাংস আহার করে অর্থাৎ,জীব হিংসা করে তারা ভগবদ্বিদেষীরূপে পরিগণিত বলে শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছ শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে "দ্বিষন্ত পরকায়েষু স্বাত্মানং হরিরিশ্বরম্। মৃতকে সানুবন্ধেঽস্মিন্ বদ্ধস্নেহাঃ পতন্ত্যধঃ॥" অর্থাৎ _"স্ত্রী-পুত্রা দিযুক্ত শবতুল্য নিজ দেহের প্রতি আসক্ত মানুষেরা পরদেহে স্থিত জীবাত্মার প্রতি হিংসাবশত পরমাত্মা জগদীশ্বর শ্রীহরির প্রতিই বিদ্বেষ করে থাকে এবং তার ফলে তারা নরকগামী হয়।" *(ভাগবত-১১/৫/১৫)* কৃষ্ণ-প্রেমতরঙ্গিনী গ্রন্থে(১১/৫/৪১)বলা হয়েছে--- "কেবল ঈশ্বরদ্রোহী প্রাণী বধ করে।" সুতরাং,নারকী ভগবদ্ বিদ্বেষীরা ভগবদ্ উপাসনা করার অনুপযুক্ত--এরূপ মানুষেরা যদি ভগবানের শ্রীবিগ্রহ পূজা করেও,তবুও ভগবান প্রীত হননা। এই সম্পর্কে ভাগবতে বলা হয়েছে "ততোঽর্চ্চায়াং হরি কেচিৎ সংশ্রদ্ধায় সপর্য্যয়া। উপাসত উপাস্তাপি নার্থদা পুরুষদ্বিষাম্॥" অর্থাৎ," তদন্তর কেউ কেউ শ্রীহরির অর্চা মুর্তি শ্রদ্ধা সহকারে নানাবিধ উপকরণ দ্বারা পূজা করেন,কিন্তু জীব বিদ্বেষী ব্যক্তিরা পূজা করলেও শ্রীমূর্তি পরমার্থপ্রদ হননা।"(ভাগবত-৭/১৪/৪৩) তাই যারা ডিম,মাছ,মাংস ভক্ষণ করেন,তাদের দ্বারা ভগবানের বিগ্রহ পূজা একেবারেই নিষিদ্ধ। এই প্রসঙ্গে শ্রীকৃষ্ণপ্রেমত রঙ্গিনী গ্রন্থে নির্দশিত হয়েছে "সেই মূর্তি করে যেবা ভজে নারায়ণ। জীব হিংসা করে যদি নাহি প্রয়োজন॥" উপরের আলোচনা থেকে কি মনে হয়,মাছ মাংস খেয়ে হরিনাম করলে হরিনামের ফল ফলবে? না ভগবানকে পেয়ে যাবেন? স্বয়ং বিচার করবেন!! শেষে একটা কথা বলি, আপনি আপনার মন্দিরে কখনো একটা অপবিত্র আমিষের পাত্র আপনার মন্দিরে নিয়ে যান না, অথচ আপনি সবসময় মাছ মাংস ভক্ষণ করছেন তাহলে আপনার অপবিত্র বড় আমিষের পাত্র আপনার দেহ, সেই অপবিত্র দেহ নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন কি করে? ভগবানের বিগ্রহ স্পর্শ করেন কি করে? ভগবানের সেবায় আপনার দেহপাত্র লাগবে কি করে? স্বয়ং বিচার করে দেখবেন। এবার বলি মাছ মাংস খেয়ে হরিনাম করবেন,তা ভালোই! আচ্ছা বলুন তো আপনার গায়ে চুলকানি বা এলার্জী হলে ডাক্তার CTZ ট্যাবলেট দিয়ে বলেন যে,এই ট্যাবলেট খাবেন আর চুলকানি বৃদ্ধিকারক খাবার যেমন বেগুন, ডিম,মাংস ইত্যাদি খাবেন না। কিন্তু আপনি লোভ সামলাতে না পেরে ট্যাবলেটও খাচ্ছেন আবার চুলকানি বৃদ্ধির খাবারগুলোও খেয়ে যাচ্ছেন তাহলে কি আপনার চুলকানি সারবে?? কখনোই না। তেমনি হরিনামও করবেন আবার জীবহত্যা পাপে লিপ্ত থাকবেন,এতে কখনোই হরিনাম পূর্ণ ফল প্রদান করবেন না। অর্থাৎ হৃদয়ে কখনোই শুদ্ধ কৃষ্ণপ্রেমের উদয় হবে না। এইবার শেষে বলি তাই বলে যারা পরিস্থিতির চাপে পড়ে হরিনাম জপ করছেন ও আমিষ আহার করছেন,তারা প্রচেষ্টা করবেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জীব হিংসা ত্যাগ করার প্রচেষ্টা করবেন,কিন্তু হরিনাম ছাড়বেন না। কারণ হরিনাম হল গঙ্গাজলের মতো পবিত্র,একটা মদের বোতলে রাখলে তা ভগবানের সেবায় লাগে না, কিন্তু মনে করুন গঙ্গার পাড়ে একটা ছোট্ট পচা ডোবা আছে, গঙ্গা থেকে গর্ত দিয়ে একটু একটু জল ঢোকে, কিন্তু পচে যায়। তবে একটু একটু করে ঢুকতে ঢুকতে যখন ঐ গর্তটা বড় হয়ে যায় বা গঙ্গার ঢেউ আসে তখন ঐ পচা ডোবাটাও পবিত্র গঙ্গাজলে পরিপূর্ণ হয়ে স্বয়ং গঙ্গা হয়ে যায়। সুতরাং আমরা সবাই অপবিত্র থাকি, কিন্তু পবিত্র গঙ্গাসম হরিনাম জপ করতে করতে যখন এই হরিনামের প্রভাবে বন্যা বয়ে যাবে, তখন আপনার পচা দেহরূপ ডোবাখানাও একদিন পবিত্র গঙ্গাতে রূপান্তরিত হবেই হবে।অর্থাৎ হরিনামের প্রভাবে একদিন আপনি সমস্ত কিছুই পরিত্যাগ করে দিয়ে পবিত্র শুদ্ধ ভক্তে রূপান্তরিত হয়ে যাবেন। ভক্ত অধম মিঠুন সাহা কৃপা করবেন ভক্ত হরে কৃষ্ণ
0 comment of posting দয়া করে সবাই পরবেন জয় হরিবল
30

no comment
» একটি শিক্ষনীয় গল্প সবাই পরবেন
» দয়া করে সবাই পরবেন জয় হরিবল
» শ্রী কৃষ্ণ নীয়ে কীছু কথা
» আসুন অশৌচ নিয়ে কিছু কথা জেনে নি
Name:

Comment:

Smilies List
online: 0 | hits: 367x
© pvlcms